দক্ষিণ মেক্সিকোর পাহাড়ি গ্রামের ছোট এক কুঁড়েঘরে একা একাই ছিলেন ইনেস রামিরেজ পেরেজ। প্রসব বেদনায় কাতর হয়ে তিনি বুঝতে পারছিলেন, তার সন্তান পৃথিবীর মুখ দেখতে চলেছে শীঘ্রই।
ইনেস রামিরেজ পেরেজ হলেন চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে একমাত্র পরিচিত নারী, যিনি নিজের উপর সফলভাবে সিজারিয়ান সেকশন (Cesarean section) বা অস্ত্রোপচার করে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। এটি একটি চরম বিরল এবং বিপজ্জনক ঘটনা।
তিন বছর আগেই তিনি এক মৃত কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। এবারের প্রসববেদনার সাথে সাথে পুরনো সেই ঘটনাও বার বার ফিরে আসছিল তার মনে।
সূর্য অস্ত গেছে অনেকক্ষণ আগে। কাছের ক্লিনিকটিও প্রায় ৫০ মাইল দূরে; কণ্টকাকীর্ণ পথ আর দুর্গম রাস্তার পেরিয়ে তবেই যেতে হবে। আগের ছয় সন্তান জন্মের সময় তার স্বামী পাশে থাকলেও সেদিন তিনি দূরে মদ্যপানে ব্যস্ত ছিলেন। যোগাযোগের জন্য কোনো ফোনও ছিল না।
রাত বারোটার দিকে, টানা বারো ঘণ্টার প্রসববেদনার পর, ৪০ বছর বয়সী এই নারী এক কাঠের বেঞ্চে বসলেন। কিছুটা সাহস পেতে তিনি নিজেই কয়েক ঢোক অ্যা ল কো হ ল গিললেন, তারপর হাতের কাছে থাকা ছয় ইঞ্চি লম্বা ছু রি তুলে নিলেন। এরপর তিনি নিজের পেটে ছু রি চালালেন।
একের পর এক ত্বক, চর্বি ও পেশি কাটতে কাটতে জরায়ু পর্যন্ত পৌঁছান ইনেস। তারপর নিজেই হাত ঢুকিয়ে টেনে বের করেন পুত্রসন্তানকে। শিশুর নাড়ি কে টে দেন একজোড়া কাঁচি দিয়ে; তারপর অজ্ঞান হয়ে পড়েন।
ঘটনাটি ঘটে ২০০০ সালের ৫ মার্চ; ২৫ বছরের বেশি সময় আগের। ইনেস রামিরেজ এখন বিশ্বজুড়ে পরিচিত এক ‘আধুনিক বিস্ময়’ হিসেবে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে তাকেই একমাত্র নারী হিসেবে ধরা হয়, যিনি নিজ হাতে নিজের সফল সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার করে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন।
নিজের কাঠের তৈরি ঘরের সামনে বসে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপে ইনেস বলেছিলেন, “আমি আর ব্যথা সহ্য করতে পারছিলাম না। ভেবেছিলাম, যদি আমার বাচ্চা মারা যায়, তাহলে আমিও মরব। কিন্তু যদি সে বাঁচে, তাহলে আমি ওর সঙ্গে থাকব, ওর বড় হওয়া দেখব। বিশ্বাস করেছিলাম, ঈশ্বর আমাদের দুজনকেই রক্ষা করবেন।”
যদিও তার ঘটনার কোনো প্রত্যক্ষ সাক্ষী নেই, তবু প্রসবের ১২ ঘণ্টা পর তাকে পরীক্ষা করা দুজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ নিশ্চিতভাবে বলেছেন- ঘটনাটি সত্য। তার গ্রামেও কেউ এই কাহিনির সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেনি।
#viralpost2025 #viralpost
( সংগৃহীত)
Comments