শ্যামা সুন্দরীমুক্তারুল ইসলাম মুক্তার
প্রথম পর্ব
Time:10:40pm
Date:01.11.2021
আমি এমন একজন যার বেড়ে ওটা অন্য দশ জন ছেলের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। অতিসাধারন ভাবে বড় হয়েছি আমি । আমরা যে সময়ে বড় হয়েছি তখন স্টাইল বলতে তেমন কিছু ছিল না।
সবাই খুব সাদা সিধে জীবন যাপন করতো। তখন দশ টাকায় যেন অনেক টাকা। ঠিক এমন একটা সময়ে আমরা বড় হয়েছি।
আমি স্কুলে পড়তাম তখন মোবাইল ফোন ছিল না। কতিপয় কয়েক জনের হাতে ছিল।
এখন তো ছোট বাচ্ছাদের হাতেও টার্চ ফোন। ভাবতেই অবাক লাগে আমার, আমাদের সময়ের কথা মনে হলে।
আমি যখন স্কুলে যাইতাম মাঝে মধ্যে একটা মেয়েকে দেখতাম । আর মনে মনে ভাবতাম, মনে সে আমার খুব কাছের একজন হবে, আসলে তা না। তাকে নিয়ে আমি মাঝে মাঝে ভাবতাম।
আমি তো কখনোই বুঝতাম না যে ভালবাসা টা কি জিনিস ।
এখন তো আট নয় বছরের ছেলে মেয়েরাও প্রেম করে।
যদিও আমি তখন বড় ছিলাম, কিন্তু সে ছিল পিচ্ছি একটা মেয়ে। মনে হয় সে ৬ষ্ঠ কিংবা ৭ম শ্রেণীতে পড়ে। আর তখন আমি দশম শ্রেণীতে পড়ি। প্রতিদিন তার সাথে আমার দেখা হতো। আমি তাকে দেখার পর যেন অন্য কাউকে আর দেখতে ইচ্ছে হতো না, শুধু ওর দিকেই চেয়ে থাকতাম । যতক্ষন না সে আমার চোখের আড়াল হয়। আমি জানি না; সেও কেন আমার দিকে বার বার ফিরে দেখতো।
হঠাৎ করেই আমার মাথায় একটা বুদ্ধি আসল তাকে আমি কিছু বলবো। কিন্তু কিভাবে বলবো, সে তো আমাকে চেনে না। এটা নিয়ে ভাবতে ভাবতে আমার দিন চলে গেল, আবার রাত ফিরে এলো। তবুও কিছু ভেবে পেলাম না। আর আমি যদি তাকে কিছু বলি, আর সে যদি তার বাবাকে গিয়ে বলে দেয়। এটা ভেবেই তাকে কিছু বলা হয় নি কারণ সে ছোট মানুষ, যদি না বুঝে তার বাবা মাকে বলে; তাহলে সর্বনাশ হবে আমার। আর এভাবে কাটতে লাগল আমাদের দুজনার দিনগুলো।
কেউ কাউকেই বলতে পাচ্ছে না। এই যে ভয় টা সে যদি আমাকে কিছু বলে আর তার পরিবার যদি এ বিষয়ে জানে, তাহলে মহাবিপদ।
এভাবেই কেটে গেল দুই বছরের মতো। তবুও বলা হলো না ভালবাসার কথা।
তার পড়ে আমি স্কুল থেকে বিদায় নিয়ে কলেজে চলে আসলাম। আর আস্তে কমতে শুরু হলো আমাদের দু'জনার দেখা সাক্ষাৎ। ও তখন ওর পড়া নিয়ে ব্যস্ত আর আমি আমার পড়ার পড়া নিয়ে । মাঝখানে প্রায় অনেক অনেক দিনের মতো আমি তারে আর সেই আগের মতো দেখি না।
কম করে হলেও ছয় মাসের মতো হবে।
ভুলেই গেছি তার নাম বলার কথা। ওর নাম আখি । ওর আর কোন নাম আছে কিনা তা আমি জানি না । আমি তারে এই নামেই চিনি। ওর চোখ গুলো সুন্দর বলেই মনে হয় এই নাম রাখছে।
ওর রুপের কি দিব বর্ণনা;
ভালবাসা কখনো সৌন্দর্য, টাকা পয়সা দেখে হয় না। ভালবাসা হয় মন থেকে। আর টাকা দিয়ে যে ভালবাসা হয় সেটা কখনোই ভালবাসা হতে পারে না। সেটা হচ্ছে মাত্র চাহিদা।
রুপের ভালবাসা চিরকাল থাকে না, রুপ শেষ হলেই ভালবাসাও শেষ। তাই সব সময় মন থেকে ভালবাসতে হয়।
সে সবার চোখে দেখতে সুন্দর না হলেও, সে আমার কাছে রানির মতো, অনেক সুন্দর। তার চোখ গুলো দেখতে ঠিক যেন হরিণের চোখের মতো। ওই চোখ দিয়ে যখন সে আমার দিকে তাকায়, আহ! আমার মন যেন ভালবাসায় ভরপুর হয়ে যায়। কি অপরূপ সুন্দর! যেন জান্নাতি হূর।
"তোমার কাজল কালো আর হরিণী দু চোখের ঐ মায়াবী চাহনী ;
আমাকে বার বার তোমার প্রেমে ফেলায় "
তার গায়ের রং ধপধপে সাদা না হলেও তাতে কি ? আমার সবসময় শ্যাম মেয়েদেরকেই বেশি ভালো লাগে। আর সে জন্যই আমি তাকে শ্যামা সুন্দরী বলে ডাকি।
Comments